নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্থিতিশীল না হলে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চল, পশ্চিমবঙ্গ ও মিয়ানমারে প্রভাব পড়বে। ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের আগের দিন এই মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষের বসবাস, যার অধিকাংশই যুবক। তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি। তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই হবে প্রধান কাজ। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে এবং জনগণকে তার অংশীদার করতে হবে।’
ভারতের এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, দেশে এতকাল আইনশৃঙ্খলা ছিল না বলেই আজকের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছিল এবং তা করতে বাধ্য হন। মানুষ এখন উদযাপন করছে ১৯৭১ সালের পর দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস হিসেবে।
ইসলামি মৌলবাদ, উগ্রপন্থা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘এসব ঘটনার দায় শেখ হাসিনার। দেশের মানুষের মন বিষিয়ে দিয়েছেন, যার ফলে মানুষ এমন কাজ করছে।’
ড. ইউনূস বলেন, আইনশৃঙ্খলা ঠিক করাই এখন এক নম্বর কাজ। হাসিনা সে কাজে ব্যর্থ হয়েছেন বলেই তাঁর সরকার ভেঙে পড়েছে। এখন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে লোকজন উদ্যাপন শেষে ঘরে ফিরে যাবে এবং মুক্তমনে কাজ করবে।
হাসিনার ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। তবে তাঁর ভারতে থেকে যাওয়াটা ঠিক হবে না।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্রী হলে সংখ্যালঘুরাও নিরাপদে থাকবে। তাদের বক্তব্য প্রাধান্য পাবে এবং তারা নিজেদের প্রতিনিধি নিজেরাই বেছে নিতে পারবে, যেমন ভারতের সংখ্যালঘুরা পান।
ড. ইউনূস দেশের আপামর জনসাধারণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা এখন দেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে যাবো। আমাদের তরুণরা নতুন পৃথিবী বিনির্মাণে প্রস্তুত। শান্তিপূর্ণভাবে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।
এই বিবৃতিতে ড. ইউনূস তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং দেশকে স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে নিতে তাঁর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।